কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত স্যারের ‘অতিরিক্ত সচিব’ পদে পদোন্নতি

একজন মানুষ কতটা সৎ, বিনয়ী ও কর্মক্ষম হতে পারে, তা কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত জনাব জুলফিকার রহমান সাহেব তার প্রকৃত উদহারন। আমরা কোরিয়া প্রবাসীরা সত্যিই ভাগ্যবান, স্যারের মতন একজন নিরহংকার ও প্রানপ্রাঞ্চল পুরুষকে আমাদের অভিভাবক হিসেবে পেয়েছি।

তিনি রাষ্ট্রদূত হিসেবে কোরিয়াতে আসার পর থেকেই সউলের বাংলাদেশ দূতাবাসের সেবার মান আমুল পরিবর্তন ঘটে। বাংলাদেশীদের মধ্যে দূতাবাসভীতি থাকার কারণে অনেকেই সমস্যা থাকার পরও দূতাবাসের দ্বারস্থ হতোনা। আর এখন দূতাবাসের কোন অনুষ্ঠানের খবর পাইলেই সবাই উপস্থিত থাকার জন্য আগ্রহ ও আপ্রাণ চেষ্টা করে।
স্যারের সবচেয়ে মহানুভবতা তিনি ওয়াদা খেলাফ করেন না। বাংলাদেশী যেকোন ছোট-বড় অনুষ্ঠানে তিনি উপস্থিত হন। শত ব্যাস্ততার মাঝেও তিনি কাউকে নিরাশ করেননি। প্রত্যেক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে সবার সাথে বন্ধুসুলভ আচরণে সবাইকে বিমুগ্ধ করে রাখেন। একজন দায়িত্বশীল অভিভাবক হিসেবে তার পরামর্শ ও বক্তব্য সবসময় সুস্পষ্টভাবেই ব্যক্ত করেন।

এইবার (২০১৬ সাল) কোরবানি ঈদের পর স্যার আমাদের অনেককেই ঈদপূর্ণমিলনী অনুষ্ঠানে তার বাসায় দাওয়াত দিলেন। আমরা সাধ্যমত কিছু ফলমূল সাথে নিলাম। স্যার, দরজার কাছেই সবাইকে রিসিভ করছিলেন। আমাদের হাতে এসব দেখেই তিনি কপট রাগ করলেন এবং কিছুটা ধমকের সুরে বল্লেনঃ আপনারা এসব এনেছেন কেন? যাওয়ার সময় সব নিয়ে যাবেন। বলেই তিনি হাসিমুখে সবার সাথে কোলাকোলি ও মুসাফাহা করলেন। স্যারের নিঃস্বার্থ ভালোবাসা ও শাসন আমাদেরকে সবসময় আবেগাপ্লুত করে।

দূতাবাসের নোটিসবোর্ডে টাঙ্গিয়েছেন ও ফেসবুক পেজে ফলাওভাবে প্রচার করেছেন “দূতাবাসে উপকৌটন না নিয়ে আসার জন্য অনুরোধ” এতে নাকি কাজের ব্যাঘাত ঘটে। আমাদের ধারনা গোটা বিশ্বে সেবাপ্রদান কেন্দ্রগুলোতে এমন দৃষ্টান্ত খুবই বিরল। স্যার যে কর্মে ও সেবাতে বিশ্বাসী, এটা তার আরেকটি প্রমাণ।
স্যার এই ঈদে আরও একটি বড় কৃতিত্বের কাজ করেছেন যাতে আমরা বাংলাদেশী হিসেবে গর্ববোধ করতে পারি। তিনি কোরিয়ান প্রত্যেক মালিকের কাছে ঈদের শুভেচ্ছাবার্তা প্রেরণ করেছেন। এবং তাদের কাছে অনুরোধ করেছেন, কেউ যদি ঈদের ছুটি চায় তবে তাকে যেন ছুটি দেওয়া হয়। স্যারের এই মহতী উদ্যেগের কল্যাণে মালিকের চোখে আমরা দায়িত্বশীল এক দেশের নাগরিক হিসেবে বিবেচিত হলাম।

স্যার সবচেয়ে যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছেন ছুটির দিনেও দূতাবাস খোলা রেখে। বাংলাদেশী ও প্রবাসীদের সুবিধার্তে মাসে অন্তত একদিন ছুটির দিনে দূতাবাস খোলা রাখা এবং বিভিন্ন জায়গায় কন্স্যুলার সেবা প্রদান করার ব্যবস্থা করে। স্যারের কর্মসাফল্য ও কর্মবিজয়ের কথা আমাদের দ্বারা লিখে শেষ করা সম্ভব নয়।

স্যার আজকে বাংলাদেশ সরকারের ‘অতিরিক্ত সচিব’ পদে পদোন্নতি পেয়েছেন। তিনি তার যোগ্যতা ও পরিশ্রমের ফলেই এই মর্যাদা লাভ করেছেন। আমরা সকল প্রবাসী এবং ESWO (EPS Sports and Welfare Organization) এর পক্ষ থেকে স্যারকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। এবং আগামীতে সাফল্যের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে বাংলাদেশকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবেন এই কামনা করি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *